গবাদি পশু খামারের গুরুত্ব ও জনপ্রিয় ১০ টি গরুর জাত

ভূমিকা
বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে গবাদি পশু পালন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য আয় ও কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বৃহৎ জনসংখ্যার একটা অংশ এই সেক্টরে নিয়োজিত থেকে কেউ কেউ ক্ষুদ্র এবং কেউ কেউ বৃহৎ আঙ্গিকে গবাদি পশু পালন করে চলেছে। গবাদি পশু পালন অতীতে বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য আয় ও কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, যা বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে এবং দিনকে দিন এর এর গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ অতীতে জমি চাষের জন্য গরু ব্যবহার করার ঐতিহ্য গত প্রথা থেকে শুরু করে ঈদুল আযহার মত উৎসব উদযাপনে, যেখানে গবাদি পশু জবাই করা হয়, সেখানে গবাদি পশুপালনের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে এটাই বাস্তব সত্য।

খামার তৈরির গুরুত্ব

গবাদি পশু পালনের জন্য দক্ষ খামার ব্যবস্থাপনা কৌশল জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ একজন খামারি সরাসরি তার কার্যক্রমের জন্য লাভজনক স্থায়িত্বকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। সঠিক ব্যবস্থাপনার কৌশল প্রয়োগ করে খামারিরা তাদের গবাদি পশুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারে, রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে, প্রজনন কর্মসূচিকে পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং উৎপাদনশীলতাকে সর্বোচ্চ করতে পারে। খামার তৈরীর সময় গবাদি পশুর যাতে করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।

গবাদি পশু খামারের গুরুত্ব ও জনপ্রিয় ১০ টি গরুর জাত

বিশ্বের জনপ্রিয় দশটি গরুর জাত

একজন খামারির সব সময় লক্ষ্য রাখা উচিত যে, কম সময়ে এবং কম খরচে গরুর খামার করে তুলনামূলক ভাবে বেশি লাভবান হওয়া। কিন্তু গরুর খামারের জন্য যদি উপুযুক্ত এবং উন্নত মানের গরু নির্বাচন করতে না পারা যায়, তাহলে অবশ্যই লাভবান হওয়া কষ্টকর হয়। তাই খামার করার জন্য অবশ্যই গরুর ভালো জাত নির্বাচন করা একটি অন্যতম কার্য। আমাদের দেশে দেশীয় গরুর পাশাপাশি যে সকল গরু পালন করা হয়। এগুলোর চাইতে নিম্নলিখিত জাত গুলো বিশ্বব্যাপী সুনামের সাথে পালন করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের খামারিদের জন্য দ্রুত বর্ধনশীল কয়েকটি জাতের গরুর মধ্যে রয়েছে- জার্সি, হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, ব্রাউন সুইস, আয়ারশায়ার, গারনেসি, আমেরিকান মিল্কিং শর্টহর্ন, নরম্যান্ডি ক্যাটল, নওরেজিয়ান রেড, লাল ও সাদা হলস্টেইন, মিল্কিং শর্টহর্ন ইত্যাদি।

খামার তৈরির সময় লক্ষণীয়

আপনার গবাদিপশুর খামার তৈরি করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, তাদের সুস্থতা, উপুযুক্ত বাসস্থান যাতে পরিবেশবান্ধব হয়। সেজন্য পর্যাপ্ত আলো বাতাস যাতে আপনার খামারের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কারণ পরিমাণ মত আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা না থাকলে গবাদি পশু রোগ ব্যাধিতে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং গবাদি পশু একটু চাপের মধ্যে থাকে। এজন্য খামার তৈরির সময় পশুর থাকার পর্যাপ্ত স্থান এবং সঠিক বায়ু চলাচল করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

গবাদি পশুর জন্য উচ্চ ফলনশীল ঘাস 

 গরু খামারের জন্য গরুর খাদ্যের অন্যতম উপাদান সবুজ ঘাস। অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি গরুর প্রিয় খাদ্য সবুজ ঘাস। এই সবুজ ঘাস উচ্চ ফলনশীল হলে খামারিরা লাভবান হয়ে থাকেন।  একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য যেমন মানুষের জন্য উপকারী, তেমনি  একটি পুষ্টিকর ঘাস গবাদি পশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত উপকারি। তাই একজন খামারিকে অবশ্যই ভালো জাতের ঘাস নির্বাচন করতে হবে এবং সেগুলো গবাদি পশুকে খাওয়াতে হবে।

 উচ্চ ফলনশীল ঘাস কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ গুলোর সর্ব উত্তম ভারসাম্য প্রদান করে থাকে, তাই গবাদি পশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। উচ্চ ফলনশীল ঘাসের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সবুজ ঘাস হল- বারমুডা ঘাস, টিমোথি ঘাস, ফেসকিউ অন্যতম।


উপসংহার

 উচ্চ ফলনশীল জাতের ঘাস গবাদি পশু খামারিদের জন্য একটি সবুজ স্বর্গ। এই সবুজ ঘাস আপনার খামারের গবাদি পশু পালনের পথকে আরো সহজ করে তুলবে। মনে রাখবেন একটি সুখী গরু, একটি স্বাস্থ্যকর গরু এবং একটি সুস্থ গরু মানে একটি মূর্তিমান খামারের জীবন।




এই লেখাটি দেশি ও বিদেশী লেখা থেকে সংগৃহীত এবং পরিমার্জিত
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন